December 23, 2024, 4:42 pm
মোঃ সোহেল রানা রাজশাহী বিভাগীয় প্রধানঃ রাজশাহী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) নারী চীফ ইনস্ট্রাক্টর (জেনারেল ইলেকট্রনিক্স) সাঈদা মমতাজ নাহরীনা ইকবালের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনে বাধ্য করা এবং এই কর্মসূচি পালনের এখতিয়ার নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে ও বাইরে সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ এসএম এমদাদুল হকের নির্দেশে এই কর্মসূচি পালনে বাধ্য করায় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ এসএম এমদাদুল হকের নির্দেশে গত ২১ অক্টোবর দুপুরে টিটিসি ক্যাম্পাসের ভেতরে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আগে থেকে এ কর্মসূচির বিষয়ে কিছুই জানতাম না। জরুরি ভিত্তিতে কোইকা ভবনের নিকট ডেকে নিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের সামনে ব্যানার ধরিয়ে মানববন্ধন করতে বাধ্য করা হয়। এ নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজশাহী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) নারী চীফ ইনস্ট্রাক্টর (জেনারেল ইলেকট্রনিক্স) সাঈদা মমতাজ নাহরীনা ইকবাল তাকে আপত্তিকর প্রস্তাব ও হুমকি দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ প্রকৌশলী এসএম এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের (ডিজি) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় এক মাস হলেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেননি প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ডিজি।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ নিজের অপরাধকে আড়াল করতে একই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী চীফ ইনস্ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। যা অধ্যক্ষের এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনিই তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই নারী চীফ ইনস্ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে ডাকা মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিতে অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানতে চাইলে চীফ ইনস্ট্রাক্টর সাঈদা মমতাজ নাহরীনা ইকবাল বলেন, আমার বিরুদ্ধে ডাকা মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয়েছে। আমাকে নানা ভাবে হয়রানি ও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। তিনি বলেন, অধ্যক্ষ চাইলে নিয়ম অনুযায়ী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অফিসিয়ালি অভিযোগ করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে তিনি আমার বিরুদ্ধে কেন মানববন্ধন কর্মসূচি করালেন। এ কর্মসূচি পালন সম্পূর্ণ অবৈধ ও এখতিয়ার বহির্ভূত।
তবে এ ব্যাপারে রাজশাহী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) অধ্যক্ষ প্রকৌশলী এসএম এমদাদুল হকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের (ডিজি) কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে সাঈদা মমতাজ নাহরীনা বলেন, ‘আমি চীফ ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে ইলেকট্রনিক্স ট্রেডে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। কিন্তু অধ্যক্ষ প্রকৌশলী এমদাদুল হক এই কেন্দ্রে যোগদান করার পর থেকেই আমাকে বিভিন্ন সময়ে ছুটির পরে তার রুমে দেখা করতে বলেন এবং কু-প্রস্তাব দেন। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হলে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেন।
অভিযোগে তিনি আরো বলেন, অধ্যক্ষ তাকে অন্যত্র বদলী করার হুমকি দিচ্ছেন। এছাড়া কিভাবে রাজশাহীতে চাকরি করেন দেখে নেয়া হবে বলেও হুমকি দেন এবং হয়রানি করছেন।